ক্রিস্টমাস ক্যাটারপিলার (শুঁয়োপোকা) কেলী
কোন একসময়ে, বেথলেহেম নামক একটি জায়গা, কেলী নামক একটি শুঁয়োপোকা বাস করত। সে এক ভালোমনের শুঁয়োপোকা ছিল যে নিজেকে সর্বদা ঝঞ্ঝাট থেকে দূরে রাখার যথাসম্ভব চেষ্টা করত। কিন্তু তা তার জন্য খুবই কঠিন কাজ ছিল কারণ সে বেশীরভাগ সময়ই বেঠিক চয়ন করত।
একদিন খিদে পেলে খাবার খুঁজতে খুঁজতে কমবয়সী শুঁয়োপোকাটি একটি পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার সিদ্ধান্ত নেয়। যখন সে চূড়ায় পৌঁছল, তার চোখে পড়লো বহু পাথরে ঘেরা একটি গুহা। কেলী কৌতূহলী হয়ে ওঠে। যদিও তার মনে হচ্ছিল যে গুহায় ঢোকা হয়তো ঠিক হবে না, তবু সে ভিতরে ঢোকার সিদ্ধান্ত নিল।
গুহায় প্রবেশ করা মাত্র কেলী ঠাণ্ডা এবং একাকীত্ব অনুভব করতে লাগলো। ও খুবই ঘাবড়ে যায় কারণ এর আগে ও কখনো এত অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং নিস্তব্ধ জায়গায় আসেনি। শীঘ্রই সে পেছনে ফিরে বেড়িয়ে আসতে গেল। কিন্তু দুর্ভাগ্য বসত, ছোট্ট শুঁয়োপোকাটি কয়েকটা পাথর থেকে পরে যায় আর বাইরে বেড়নোর রাস্তা হারিয়ে ফেলে। ও বাঁ দিকে গেছিলো না ডান দিকে? কেলী জানত না।
গুহায় হারিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে, যা অনেকটাই লম্বা মনে হচ্ছিল, কেলীর ভাবে সে এখান থেকে কখনই বেরোতে পারবেনা। সে অন্ধকারের মধ্যে হারিয়ে গিয়েছিল এবং নিজেকে বলল “হয়তো এই ভয়ঙ্কর গুহাটিতে প্রবেশ না করলেই হত”। কেলীর ভয় লাগল কারণ সে জানত না যে তার কি করা উচিত।
শীঘ্রই সেই লোকগুলো নিজেদের পশুদের এই শীতের রাত থেকে বাঁচাতে ফিরে এলো। কেলীর ভালো লাগছিল যে গুহায় তার সাথে আন্যরাও আছে, তবে এই বিরাট গুহা থেকে কোনদিন সে বেড়তে পারবে না ভেবে কেঁদেই গেল। যদিও পশুগুলো এখানে উপস্থিত রয়েছে, কিন্তু লোকগুলো বাঁ পশুগুলোর পিছু পিছু এখান থেকে বেড়ানোর জন্য ওর পা গুলো খুবই ছোট মাপের।
এক ঝড় বৃষ্টির রাতে গোয়ালারা পশুদের ওই গুহাতে শোয়ানোর সিদ্ধান্ত নিল। যখন ওই গোয়ালাগুলো মোমবাতি নিয়ে গুহায় প্রবেশ করল, তখন কেলী দেখল যে গুহাটি অনেকটাই বড় ছিল। পশুগুলোর জন্য তারা খড় দিয়ে গরম বিছানা বানাতে লাগল। একটি লম্বা দিনের পর অন্যান্য পশুদের মতো ক্যাটারপিলারেরও ঘুম পেতে লাগলো এবং সবাই দ্রুত শুয়ে পড়ল।
পরের দিন সকালে গোয়ালারা পশুদের জাগালো এবং দ্রুত গুহাটি ছেড়ে চলে গেল। যখন কেলীর ঘুম ভেঙ্গে গেল, ততক্ষণে সবাই চলে গিয়েছিল। তখন কেলী বলল – “এবার আমি কি করি?” তার মনে হচ্ছিলো যে বাকি জীবনটাও তার এই যায়গায় হারানো অবস্থায় কাটাতে হবে।
খুব শীঘ্রই তারা আবার ফিরে ঠান্ডা রাত থেকে তাদের প্রাণী রক্ষা করার জন্য. কেলি কখনো হবে না ভাল বোধ এবং গুহা মধ্যে তার সাথে যারা, কিন্তু তিনি এখানে চিৎকার করে কাঁদতে জন্য এটি পাওয়া যায় নি. এখানে প্রাণী উপস্থিত হলেও, যাইহোক, তার পা খুব ছোট অন্ধকার থেকে বের পিছন থেকে মানুষ এবং প্রাণী.
এমন সময় সে যখন নিজেকে নিয়ে দুঃখ পাচ্ছিলো, কিছু একটা অন্যরকম ঘটনা ঘটল। জোসেফ নামক এক যুবক গুহাতে প্রবেশ করল এবং খড় দিয়ে একটি বিছানা বানানো শুরু করল। যা কোন পশুর জন্য ছিল না। এটি ছিল তার স্ত্রী ম্যারীর জন্য, যার নিজের সন্তানকে জন্ম দেওয়ার জন্য শোওয়ার প্রয়োজন ছিল।
শুঁয়োপোকা খুব আগ্রহের সাথে এটি দেখছিল এবং ঠিক সেই সময় ম্যারী তার পুত্রসন্তানকে জন্ম দিল যার নাম সে রাখল যীশু। আলো এবং ভালোবাসাতে পরিপূর্ণ ছিল ঐ শিশু। যখন কেলী যীশুকে দেখল, তখন তার আগের সমস্ত ভয় ও একাকীত্বতা সব চলে গেল।
সেই রাতেই অন্যান্য গোয়ালারা গুহাতে আসলো এবং শিশু যীশুর জন্য গান গাইতে লাগলো। গুহাটি যা কখনও অন্ধকারে পরিপুর্ণ ছিল, এখন সেটি শান্তি আর খুশির সহিত এক আলো দ্বারা ভরে গেল। শীঘ্রই তিন সাধু, যারা উজ্জ্বল এক তারকাকে অনুসরন করছিলেন, শিশু যীশুকে তারা ক্রিস্টমাসের উপহার দিতে এলেন। তাকে তারা স্বর্ণ, লবান এবং গন্ধরস প্রদান করলেন।
কেলী মুশকিল এবং আশ্চর্যে পড়ে গেল এই যীশুকে নিয়ে, কারণ যারা যীশুর কাছে এসেছিল তারা সবাই অনেকটা খুশিতে ছিল। কিন্তু কেলী দুঃখী ছিল, কারণ শিশু যীশুকে দেওয়ার জন্য তার কাছে কোন উপহার ছিল না। সে চিন্তা করল, “আমি গুহার ভিতরে হারিয়ে যাওয়া একা শুঁয়োপোকা, উপহার হিসাবে কি দেব এই শিশুকে, যে আমাদের সবাইকে তার আলো দিয়েছে”। সে ভাবল, আরও ভাবল এবং আর একটু বেশী ভাবল।
সে বলল, “আমি জানি”। সে যীশুকে দেওয়ার জন্য উপহারটি নিয়ে খুবই উত্তেজিত ছিল। সে নিজেকে ক্রিস্টমাসের উপহারের মতো মুড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। সে অতি সাবধানতার সাথে একটি গুটি তৈরী করল এবং নিজেকে ওই গুটির মধ্যে মোড়ানো অবস্থায় প্রদর্শন করল। সেইজন্য কেলী সারাক্ষণ শুধু এটাই চিন্তা করছিল যে কিভাবে সে নিজের উপহারটি যীশুকে দেবে।
যখনই কেলী অন্ধকার থেকে উড়ে গিয়ে বাহিরে আরও বেশী আলোতে গেল, তার মুখে হাঁসি ফুটল। সে জানত যে সে সঠিক জিনিসই পছন্দ করেছে এবং যীশুও তার উপহারে সন্তুষ্ট হয়েছে। যখনই হাওয়াতে কোন প্রজাপতি উড়তে দেখা যায়, সেটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় নিজের হৃদয় যীশুকে প্রদান করার কথা।
যখনই কেলী অন্ধকার থেকে উড়ে গিয়ে বাহিরে আরও বেশী আলোতে গেল, তার মুখে হাঁসি ফুটল। সে জানত যে সে সঠিক জিনিসই পছন্দ করেছে এবং যীশুও তার উপহারে সন্তুষ্ট হয়েছে। যখনই হাওয়াতে কোন প্রজাপতি উড়তে দেখা যায়, সেটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় নিজের হৃদয় যীশুকে প্রদান করার কথা।
সমাপ্ত